Sign in
Sign in
Recover your password.
A password will be e-mailed to you.
সম্পাদকীয়
পাঠকের প্রশ্ন
‘সুখপাঠ’ পত্রিকার দ্বিতীয় সংখ্যা প্রকাশিত হল। প্রথম সংখ্যা প্রকাশের পর বহু পাঠক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পত্রিকার গ্রাহকও হয়েছেন অনেকে। বিভিন্ন লেখা নিয়ে তাঁরা মতামতও দিয়েছেন। তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আবার কেউ কেউ অভিমানও দেখিয়েছেন। সে অভিমানের রকমফের রয়েছে। তাঁরা ‘সুখপাঠ’ নাই পড়তে পারেন। তবে অন্যত্র তো সাহিত্যের পাঠে যুক্ত। তাই বা কম কী। কাজেই তাঁরা পাঠক।
কেউ বলেছেন, ‘সুখপাঠ’ গ্রাহক হয়ে অর্থাৎ কিনে পড়তে হবে কেন? অন্য বেশ কিছু ডিজিটাল পত্রিকা তো বিনামূল্যেই পড়া যায়। তাঁদের ওপর আমাদের কোনও পাল্টা অভিমান নেই। আমরা তাঁদের ‘না পড়ার’ অধিকারকে সম্মান জানাই। শুধু একটি বিনীত বক্তব্য আছে। ডিজিটাল/ওয়েব/অনলাইনে প্রকাশিত যা কিছু তা বিনামূল্যেই পড়া যাবে এরকম কোনও ঘোষণা আছে বলে আমাদের জানা নেই। মুদ্রিত মাধ্যমে, সোজা কথায় ছাপা পত্রিকার ক্ষেত্রে এমন প্রশ্ন তোলেন কি কেউ? নিজের নিজের রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী কিনেই তো পড়েন পাঠক। এমনকি লিটল ম্যাগাজিনেরও বিক্রয়মূল্য থাকে।
কেউ বলছেন, এটা তো বাণিজ্যিক উদ্যোগ। তাঁরাও ঠিকই বলেছেন। বাণিজ্য কোথায় নেই? পত্র-পত্রিকা বা বইয়ের কথাই যদি শুধু আলোচনায় আসে তা হলে সেখানেও কি বাণিজ্য নেই? লেখকরা লিখে যদি সাম্মানিক পেয়ে থাকেন তা হলে কি কারও আপত্তি থাকতে পারে? তা বাণিজ্যিক কিনা এমন প্রশ্ন উঠবে কি? পাঠকরা কি সেসব ব্রাত্য করে রাখেন?
সাহিত্যের নীতি কিংবা আদর্শের কথা যদি ওঠে তবে তার বিচারও সম্ভবত সহজ নয়। কোনও পত্রিকা ‘বাণিজ্যিক’ বলেই তা সমস্ত নীতি ও আদর্শহীন এমন ভাবা বোধহয় সরল সিদ্ধান্ত হয়ে যেতে পারে।
একটি পত্রিকা অনেক ভাঙাগড়ার ভেতর দিয়ে এগোয়। সে টিকে থাকতে পারে, মুছেও যেতে পারে। এই দুটি ঘটনার যা-ই ঘটুক না কেন, তাতে তার দোষ যেমন খণ্ডন করা যায় না তেমনই গুণ থাকলে তা স্বীকার করাই ভাল।
কেউ বলছেন, ‘সুখপাঠ’ কোন পথে বিশ্বাস করে? তার পন্থা কী? তাঁদের জানানো যেতে পারে, ‘সুখপাঠ’ বিশেষ কোনও পন্থা বা মতবাদে বিশ্বাস করে না। কারণ, তা সুসাহিত্যের অন্তরায়। একটি পত্রিকায় অনেক চিন্তার সমাহার ঘটে। সাহিত্যের পত্রিকার ক্ষেত্রে তা তো অবশ্যই সত্য। সেইসব চিন্তার কোনওটিতে পাঠকের সমর্থন থাকতে পারে, নাও পারে। তিনি প্রশংসা করতে পারেন, সমালোচনাও করতে পারেন। ‘সুখপাঠ’ এইসব নিয়েই চলতে চায়। একদা রাজশেখর বসু লিখেছিলেন-- ‘‘সাহিত্যের যে রস সুধীজনের কাম্য তা বহু জটিল উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত। আমাদের রসতত্ত্বের জ্ঞান নিতান্তই অস্পষ্ট, art for art's sake, মানব কল্যাণের নিমিত্তই সাহিত্য, মানুষে মানুষে মিলনের জন্যই সাহিত্য, জীবনের আলেখ্যই সাহিত্য-- এই ধরনের উক্তিতে রসতত্ত্বের নিদান পাওয়া যায় না।’
সাহিত্যের পত্রিকা হিসেবে ‘সুখপাঠ’ সাহিত্যের নানা রসের সন্ধানী হয়ে চলতে চায়।
কেউ বলেছেন, ‘সুখপাঠ’ কি শুধুই অগ্রজ, পরিচিত, বিখ্যাত লেখকদের লেখা প্রকাশ করবে? নবীনদের, নতুন লেখকদের জায়গা হবে না এখানে? এক্ষেত্রে বলা যায়, এমন কোনও উদ্দেশ্য বিধেয় নিয়ে ‘সুখপাঠ’ প্রকাশিত হয়নি। যে কোনও সৃজনশীল মাধ্যম প্রবীণ ও নবীনদের সমন্বয়েই গড়ে ওঠে। ‘সুখপাঠ’ তার ব্যতিক্রম হবে না। তার কাছে ভাল লেখাই শুধু বিবেচ্য। সময়ই বলে দেবে ‘সুখপাঠ’ কীভাবে গড়ে উঠছে।
পাঠকের কাছ থেকে শুধু সেই সময়টুকুরই আশা করা যেতে পারে।
অরিন্দম বসু,
সম্পাদক